August 19, 2025, 7:11 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
আমদানি শুরুর পর দাম বাড়েনি পেঁয়াজের বেসরকারি পর্যায়ে ১০ লাখ টন ডাল ও চিনি আমদানি অনুমোদন কুষ্টিয়ায় কারাগারে হাজতির মৃত্যু কুষ্টিয়ায় পদ্মা ও গড়াইয়ে পানি কমলেও দৌলতপুরে অর্ধলক্ষ মানুষ পানিবন্দি কুষ্টিয়া শাহিন ক্যাডেট স্কুল/ ছাত্রীর আপত্তিকর ছবি-ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার কুষ্টিয়ায় বন্ধুদের সঙ্গে মোটরসাইকেল রেসিং খেলতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই কিশোরের মৃত্যু ঝিনাইদহে সীমান্ত অতিক্রমের অভিযোগে ১৭ জন আটক রাজশাহীতে একই পরিবারের চারজনের রহস্যজনক মৃত্যু র‌্যাব-পুলিশের যৌথ অভিযানে কুষ্টিয়ায় স্ত্রী হত্যার অভিযোগে স্বামী গ্রেপ্তার ইসরায়েলের জন্য লুকিয়ে অস্ত্র আনছিল সৌদি জাহাজ, ইতালিতে আটক

আসাদুজ্জামান নূরের বর্ণাঢ্য ৭৫

বিনোদন ডেস্ক/

৫ বছরে পা ফেললেন সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব ও সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর। গতকাল ছিল এই কিংবদন্তি শিল্পীর জন্মদিন। প্রতি বছর এই দিনটি তার ভক্ত অনুরাগীদের কাছে স্পেশাল। কিন্তু তিনি জন্মদিন উদযাপনে একেবারেই উৎসাহ পান না। আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘আমি তো এতদিন এসব এড়িয়ে গেছি। এবার আর এড়াতে পারলাম না। যদিও নিজে কিছু করিনি। তবে আহকাম উল্লাহ সবাইকে নিয়ে একটা কমিটি করেছে। ‘আসাদুজ্জামান নূর জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটি’তে গোলাম কুদ্দুছ আছে, অনুপম সেন সভাপতি। ওরাই শিল্পকলায় বিশাল আয়োজন করেছে। আমাকে শুধু হাজির হতে বলা হয়েছে। এর আগে আমি কিছুই জানতাম না। আরও অনেকেই চেষ্টা করেছে। আমি আর কোনোটায় রাজি হইনি। বলেছি সবাই মিলে এই একটা আয়োজনই করব। পঁচাত্তর বছর বেঁচে থাকাও তো একটা বিশাল ব্যাপার। কোনোবারই উদযাপন করি না, এবারই একটু রাজি হলাম।’

‘তোমারই হোক জয়’ শীর্ষক আয়োজনের মধ্য দিয়ে আসাদুজ্জামান নূরের জন্মোৎসব পালিত হয় গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে।

৭৫ বছরের এই বর্ণিল জীবনটাকে যদি পেছন ফিরে তাকাতে বলা হয় তবে আসাদুজ্জামান নূরের স্মৃতিগুলো কেমন হবে? এমন প্রশ্নের জবাব দিলেন এভাবে, ‘আমার শৈশব-কৈশোর কেটেছে নীলফামারী শহরে। সেটি আমার জন্য একটি অসাধারণ সময় ছিল। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা, সাহিত্যচর্চা, দেয়াল পত্রিকা বের করেছি। কলেজে উঠে ইলেকশন করে জেনারেল সেক্রেটারি হয়েছি। সবকিছু মিলেই চমৎকার সময় কেটেছে। তারপর ঢাকায় এসেও তো একটা ঐতিহাসিক সময় পার করেছি। ছয় দফা থেকে মুক্তির সংগ্রাম। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস, এটি তো আমি মনে করি জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। স্বাধীনতার পরে ৫০ বছর আমরা পার করলাম। এই ৫০ বছরে আমাদের অনেক দুঃখ-বেদনাও আছে। জাতীয়ভাবে যদি চিন্তা করি আমরা বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি, এটি আমাদের বিরাট বেদনার বিষয়। পাশাপাশি যেটা হয়েছে, আমাদের চিন্তার জগৎ অনেকটা পাল্টে গেছে। স্বাধীনতার আগে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বা যুদ্ধের পর পর আমরা যেভাবে দেশটাকে দেখতে চাইতাম সেই জায়গাতে একটা বড় রকম আঘাত এলো। ঘাত-প্রতিঘাত, সংগ্রাম এবং আন্দোলনের মধ্য দিয়েই চলে যাচ্ছে, যেখান থেকে এখনো বের হতে পারলাম না। সাম্প্রদায়িক শক্তির কথা বলছি, যারা আমাদের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না তাদের সঙ্গে কিন্তু আমাদের একটা দ্বন্দ্ব লেগেই আছে। পৃথিবীর কোনো দেশে মনে হয় এমন কোনো দল নেই যারা নিজের দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিশ্বাস করে না। যে পাকিস্তানকে পরাজিত করে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেলাম সে পাকিস্তানেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আছে, তাদের মধ্যে সংঘাত আছে কিন্তু দেশ নিয়ে বা জাতির পিতা নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। দুঃখজনক হলেও আমাদের দেশে এখনো এই পরিবেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হচ্ছে।’৭৫ বছরে এই অভিনেতার অর্জন কম নয়। এককথায় বলা যায় অভিনয়, ব্যবসা ও রাজনীতি সবদিক দিয়েই তিনি সফল। করেছেন মন্ত্রিত্ব, পেয়েছেন স্বাধীনতা পদক। যদিও আসাদুজ্জামান নূর মনে করেন, তার জীবনের বড় অর্জন অসাধারণ সব মানুষের সঙ্গে মেশার সুযোগটাকে। তার ভাষায়, ‘আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো দীর্ঘ সময় ধরে এত বড় সব মানুষের সঙ্গে মেশার সুযোগ পেয়েছি। সেটি আমার জীবনের খুব বড় সঞ্চয় বলে মনে করি। শিল্পী জয়নুল আবেদিন থেকে কবি শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, শহীদ কাদরী, সৈয়দ শামসুল হক মানে বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য জগতের মানুষগুলোর সান্নিধ্য পেয়েছি। অভিনয় ও চলচ্চিত্র জগতের গোলাম মুস্তাফা, আনোয়ার হোসেন, রওশন জামিল, সৈয়দ হাসান ইমামের মতো মানুষের সঙ্গে আমার ওঠাবসার সুযোগ হয়েছে। হয়তো-বা বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্যে আমি কখনো যেতে পারিনি, তবে অন্য অনেক বড় নেতার সঙ্গে ওঠাবসার সুযোগ হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে এগুলোই আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি। পদ-পুরস্কার নয়।’ ১৯৪৬ সালের ৩১ অক্টোবর ব্রিটিশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেন আসাদুজ্জামান নূর। জন্মের দুই বছরের মাথায় ১৯৪৮ সালে পরিবারের সঙ্গে নীলফামারী চলে আসেন। ১৯৬২ সালে স্বৈরাচারী আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে সব আন্দোলনে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। আসাদুজ্জামান নূর মুক্তিযুদ্ধে ৬ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেন। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি। ছাত্ররাজনীতির পাশাপাশি তিনি জড়িয়ে পড়েন থিয়েটার ও আবৃত্তি চর্চায়। পরে টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করে পান তুমুল জনপ্রিয়তা। হুমায়ূন আহমেদের পরিচালনায় ‘এইসব দিনরাত্রি’র শফিক কিংবা ‘অয়োময়’ এর ছোট মির্জা চরিত্রে অভিনয় করে লাখো দর্শক- শ্রোতার প্রশংসা ও ভালোবাসা পেয়েছেন। তবে কিংবদন্তি হয়ে আছেন ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকে বাকের ভাই চরিত্রে অভিনয় করে। আসাদুজ্জামান নূর নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য ছাড়াও বর্তমানে তিনি সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Comments are closed.

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net